ভাব- সম্প্রসারণ
‘ভাব-সম্প্রসারণ’ কথাটির অর্থ কবিতা বা গদ্যের অন্তনির্হিত তৎপযকে ব্যাক্যা করা,বিস্তারিত করে লেখা ,বিশ্লেষণ করা।ঐশ্বর্যমন্ডিত কোন কবিতার চরণে কিংবা গদ্যাংশের সীমিত পরিসরে বীজধর্মী কোন বক্তব্য ব্যাপক ভাবব্যঞ্জনা লাভ করে । সে ভা্ববীজটিকে উন্মোচিত করার কাজটিকে বলা হয় ভাব-সম্প্রাসারণ ।
ভাববীজটি সাধারণত রূপকধর্মী,সংতকেতময় বা তাৎপর্যপূর্ণ শব্দগুচ্ছের আবরণে প্রচ্ছন্ন থাকে।নানা দিক থেকে সে ভাবটির উপর আলোক সম্পাত করে তার স্বরূপ তুলে ধরা হয় ভাবসম্প্রসারণে। ভাববীজটিকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমরা বুঝতে পারি,এ ধরনের কবিতার চরণে বা গদ্যাংশে সাধারণত মানবজীবনের কোন মহৎ আদর্শ,মানবচরিত্রের কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্য,নৈতিকতা, প্রণোদনামূলক কোন শক্তি,কল্যাণকর কোন উক্তির তৎাপর্যময় ব্যঞ্জনাকে ধারণ করে আছে।ভাব- সম্প্রসারণ করার সময় সেই গভীর ভাবটুকু উদ্ধার করে সংহত বক্তব্যটিকে পূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে ।সেই ভাব রূপক প্রতীকের আড়ালে সংগুপ্ত থাকলে,প্রয়োজনে যুক্তি উপমা,উদাহরন ইত্যাদির সাহায্যে বিশ্লেষণ করতে হবে ।
ভাব-সম্প্রসারণের কিছু নিয়ম
ভাব- সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে কয়েকটি দিকের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন ।যেমন :
ক. প্রদত্ত চরণ বা গদ্যংশটি একাধিকবার অভিনিবেশ সহকারে পড়তে হবে।লক্ষ্য হবে প্রচ্ছন্ন বাঅন্তনির্হিত ভাবটি কী, তা সহজে অনুধাবন করা ।
খ.অন্তর্নিহিত মূল ভাবটি কোন উপমা,রূপক প্রতিকের আড়ালে সংগুপ্ত আছে কিনা, তা বিশেষভাবে লক্ষ করতে হবে ।মূলভাবটি যদি রূপক–প্রতিকের আড়ালে প্রচ্ছন্ন থাকে,তবে ভাব সম্প্রসারণের সময় প্রয়োজনে অতিরিক্ত অনুচ্ছেদ যোগে ব্যাখ্যা করলে ভালো হয় ।
গ.সহজ ভাষায়,সংক্ষেপে ভাবসত্যটি উপস্থাপন করা উচিত।প্রয়োজনে যুক্তি উপস্হাপন করে তাৎপর্যটি ব্যাখ্যা করতে হবে ।
ঘ.মূল ভাববীজটি বিশদ করার সময় সহায়ক দৃষ্টান্ত,প্রাসঙ্গিক তথ্য বা উদ্ধৃতি ব্যবহার করা চলে।এমনকি প্রয়োজনে ঐতিহাসিক পৌরণিক বা বৈজ্ঞানিক তথ্য ও উল্লেখ করা যায়।তবে ভুল বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য,উদ্ধৃতি দেওয়ার চেয়ে না দেওয়াই ভালো ।
ঙ. ভাব-সম্প্রসারণ করার সময় মনে রাখতে হবে যে, যেন বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।বারবার একই কথা লেখা ভাব-সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে দূষণীয় ।