পেপ্যাল উদ্বোধন ১৯ অক্টোবর : তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী পলক

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ‘দেশে ১৯ অক্টোবরই আনুষ্ঠানিকভাবে পেপ্যাল আসছে।’বুধবার বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো-২০১৭ আয়োজন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি জানান, এক্সপোর দ্বিতীয় দিনে তা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

পলক বলেন, এরইমধ্যে দেশের ৯ ব্যাংকের সঙ্গে পেপ্যালের চুক্তি হয়েছে। পেপ্যালের সেবা চালু হলে মাত্র ৪০ মিনিটেই সরাসরি ক্লায়েন্টের অর্থ হাতে পাবেন ফ্রিল্যান্সাররা।

পেপ্যাল নিয়ে বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ১৯ অক্টোবর দেশে পেপ্যালের অফিসিয়াল লঞ্চিং। আমরা গত প্রায় সাড়ে তিন বছর হলো আইটি ফ্রিল্যান্সারদের কাছ থেকে বড় দাবি, প্রত্যেকটা ইন্টার‍্যাক্টিভ সেশনে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে প্রশ্নের সম্মুখীণ হতে হয়েছে, পেপ্যাল বাংলাদেশে কবে আসবে?

আমরা বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ভাবে পেপ্যালের সঙ্গে বৈঠক করেছি। এ বিষয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা ছিল। সেদিক থেকেই আমরা যতোবার সিলিকন ভ্যালিতে গেছি ততবারই পেপ্যালের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের ডিসিশন মেকার তাদের সঙ্গেই মিটিং করেছি। এরপর ধাপে ধাপে দেশের ইকোনোমিক্যাল গ্রোথ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালের যখন আমরা গ্লোবাল আইটি ডেস্টিনেশন তালিকায় টপ ৫০ এর মধ্যে ২২তম স্থান করে নিই। তখন এটা নিয়ে আবার আমরা লবিং করলাম। এর পর বাংলাদেশ ব্যাংক এবং কিছু পলিসির বিষয় ছিল সেগুলো করে আবার গেলাম আমাদের ডেভেলপমেন্ট।

পলক জানান, যেহেতু দেশে একটি ব্যাংকের সঙ্গে তাদের আসতে হবে এবং সিলিকন ভ্যালি থেকে একটা নস্ট্র অ্যাকাউন্ট হয়ে আসতে হবে। সোনালী ব্যাংকের একটা নস্ট্র অ্যাকাউন্ট ছিল যুক্তরাজ্যে।

আমরা এর মধ্যে অনেকগুলো প্রাইভেট ব্যাংকে যাই কিন্তু তারা এর ফিজিবিলটি দেখেনি। এর পর আমরা পেওনিয়ার, পেইজাসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে যাই। তাদের সঙ্গে আমাদের কী ধরনের ট্যাগ হতে পারে। আমরা দেখলাম যে বিশ্বে সবচেয়ে ভালো মাধ্যমে এক্ষেত্রে পেপ্যাল। এটাতেই বায়ার এবং ক্লায়েন্ট সবাই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটা মিডিয়া হয়ে দেশে টাকাটা আসতো। অনেক বায়ার আছে যারা পেপ্যাল ছাড়া টাকা দিতে চায় না। সেক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধব যারা বিভিন্ন দেশে থাকেন এবং পেপ্যাল ব্যাবহার করেন তাদের কাছে টাকাটা পাঠাতে বলেন। কিন্তু এতে করে দেশে অনেক ফ্রিল্যান্সারের লাখ লাখ টাকাও গচ্চা দিতে হয়েছে।

পেপ্যালের বিভিন্ন ধাপ ও ফিচার রয়েছে। পেপ্যাল ওয়ালেট, পেপ্যাল মানি ট্রানজিকশনসহ আরও। কিন্তু আমরা দেখলাম আমাদের বেশি প্রয়োজন ইনবাউন্ড। সেক্ষেত্রে বাংরাদেশ ব্যাংক তাদের অনুমতি দিচ্ছে অর্থটা আনার জন্য। কারণ অর্থ আনার জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। এখানে পেপ্যালই তাদের একজন প্রতিনিধি বাছাই করেছে যার মাধ্যমে ডেটাগুলো ট্রান্সফার করা হবে।

পেপ্যালের টাকা পেপ্যালের প্লাটফর্ম দিয়ে বিশ্বের যেকোনো ক্লায়েন্ট তার টাকাটা পেপ্যালের মাধ্যমে বাংলাদেশে নয়টি ব্যাংকের মাধ্যমে, যেকোনো ব্রাঞ্চে, যেকোনো ব্যক্তির কাছে পাঠাতে পারবে।

পেপ্যালের মাধ্যমে বিদেশি কোনো ক্লায়েন্ট আপওয়ার্ক, ওডেস্ক, ইল্যান্স যেকোনো মধ্যস্বত্ব প্ল্যাটফর্মকে বাদ দিয়েই সরাসরি নিয়ে আসতে পারবে।

এক্ষেত্রে কেউ যদি কোনো মাধ্যমে জব পোস্ট করে এবং সেটা পায় তাহলে কাজের পর ওই ক্লায়েন্টের কাছ থেকে তার পারিশ্রমিক হিসেবে টাকাটা সরাসরি পেপ্যাল ব্যবহার করে, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৪০ মিনিটের মধ্যে নিয়ে আসতে পারবে। এটা কখনো দুঘণ্টাও লাগে আবার কখনো ৪৫ মিনিটও লাগে। তবে মিনিমাম টাইম ৪০ মিনিট।

এটার পরীক্ষামূলক ট্রানজিকশন চলছে। অলরেডি প্রায় ৭ শতাধিক লেনদেন হয়েছে পেপ্যালের মাধ্যমে। কিন্তু পেপ্যাল আসার ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানের কিছু উদ্দেশ্য ব্যহত হওয়া শুরু হয়েছে। যে কারণে অনেকেই এর বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। তাই বিষয়টি নিয়ে সচেতন থাকার অনুরোধ করেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।